বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় চার আসামিকে আগামী ৯ এপ্রিল হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে ওই সময়ের মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলেছেন আদালত।
রোববার (২ মার্চ) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। আদালতে আজ শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
যে চার আসামিকে হাজির করতে বলা হয়েছে তারা হলেন- প্রধান আসামি এএসআই আমীর আলী, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেরোবির প্রক্টর শরীফুল ইসলাম ও ছাত্রলীগ নেতা এমরান চৌধুরী আকাশ।
আদেশের বিষয়ে প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, শহীদ আবু সাঈদের ঘটনা ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনার একটি। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগ ও তাদের সহযোগিরা ক্যাম্পাস থেকে তাকে পিটিয়ে বের করে দেয়। তিনি শান্তিপূর্ণভাবে দুই হাত বাড়িয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ছিলেন।
তখন গুলিতে শহীদ হন আবু সাঈদ। ওই ঘটনায় জড়িত মামলার চার আসামি গ্রেফতারের পর কারাগারে রয়েছেন। তাদের আগামী ৯ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই মামলার তদন্ত এপ্রিল মাসের মধ্যে সম্পন্ন হতে পারে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি প্রাথমিকভাবে ২৫ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করেন শহীদ আবু সাঈদের পরিবার। শহীদ আবু সাঈদের ভাই রমজান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বরাবর এই অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগের বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আবু সাঈদের পরিবার রংপুরে একটি অভিযোগ করেছেন। আমরা আগেও বলেছি লোকাল কোর্টে যতই মামলা হোক, যেহেতু এটা ক্রাইমস অ্যাগেইনস্ট হিউম্যানিটি, তাই এ অভিযোগ যদি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসে তাহলে সেটা প্রপার আবেদন হবে।
তিনি আরও বলেন, আবু সাঈদের পরিবার নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ট্রাইব্যুনালে এসেছেন। আজ তারা সেই ঘটনাগুলোর বর্ণনা দিয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।
অভিযোগ দিতে আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান ও তার সঙ্গে ঘটনার সময় যেসব সহযোদ্ধা ছিলেন তারা এসেছেন। তারা প্রাথমিকভাবে ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন।
গত ২০ জানুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। এরই মধ্যে হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি প্রতিনিধিদল।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ